জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ান ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসার সময় সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ মে) সংসদে ওই সময়কার ঘটনা বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার বার গ্রেফতার হয়েছি। অনেক বাধা, সরাসরি গুলি, বোমা, গ্রেনেড সব কিছু অতিক্রম করে আজ জনগণের সেবা করতে পারছি। সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময় গ্রেফতার হওয়ার আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসধীন বিশিষ্ট শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনকে দেখতে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এটা ঠিক যে সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ। আমি অনেকটা গেরিলা কায়দায়ই বেরিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি জানি আমাকে বের হতে দেবে না। সেই সময়ে পুলিশের চোখ এড়িয়ে সোজা হাসপাতালে চলে যাই। তখন আমি কতগুলি কথা বলেছিলাম। কারণ সেই সময় দেশ চালাচ্ছে কে?
সেটা আমার প্রশ্ন ছিল। সেদিন আমি খুব কড়া কথা কিছু বলি। পরদিন সকালেই পুলিশ হাজির আর্মি হাজির এবং আমাকে অ্যারেস্ট করে। সংসদ ভবনের একটা… তখন ওটা প্রায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় ছিল, সেখানে আমাকে নিয়ে আসে। একেবারে ফাংগাস পড়া। খুবই নোংরা একটা ভবন সেখানে আমাকে বন্দী করে রাখে।
তিনি বলেন, শুধু ওই দিন নয়, ১৯৮৩ সালে এরশাদ সাহেবও আমাদের গ্রেফতার করে নিয়েগিয়েছিল ৩০ নম্বর হেয়ার রোড লাল দালান- সেখানে রেখেছিল। সেখান থেকে ডিজিএফআইয়ের অফিসে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এরশাদ সাহেবের সময়ে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার করে। হাউজ অ্যারেস্ট করে। কখনো সারা রাত কন্ট্রোল রুমে বসিয়ে রাখে। এরকম বার বার গ্রেফতারও হয়েছি। অনেক বাধা, সরাসরি গুলি।
বোমা, গ্রেনেড সব কিছু অতিক্রম করে আজ এখানে এসে জনগণের সেবা করতে পারছি। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও আমার দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে দাঁড়িয়েছি। আজ অনেকে বেচেঁ নেই। তারা এবং সাধারণ জনগণ রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সেদিন গিয়েছিলেন। যার জন্য আমি দেশে ফিরে আসতে পেরেছি। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমি ফিরে আসবোই।
১৭ মে (১৯৮১ সালের) ওই ভাবে এসেছিলাম। পরে ৭ মে এসেছিলাম ২০০৭ সালে। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটুকু বলতে চাই বাবা মা আমাদের শিখিয়েছেন সাহসের সাথে এগিয়ে চলা। সেই সাহসের সাথে এগিয়ে চলে জনগণের জন্য কাজ করা। সেটাই আমি করে যাচ্ছি। বাবা মা ভাইদের হারিয়ে আমার আর কিছুই ছিলো না।
দেশের জনগণই আমার একমাত্র শক্তি ও প্রেরণা। এই শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ করবো।