শার্শার কায়বায় ইউপি চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা

যশোরের শার্শা উপজেলার ৭ নং কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্টের দোসর অভিযোগ তুলে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিল বিএনপির কতিপয় ব্যক্তিরা।

মঙ্গলবার (১২ আগষ্ট) বেলা ১০ টার দিকে স্থানীয় বিএনপির কতিপয় ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যানকে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দিয়ে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এসময় তার অপসারণের দাবি করেন তারা।

তবে’ ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন জানান, তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীরা এ কাজ করেছে।

জানা গেছে, শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আওয়ামীলীগের সমর্থক। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথমবার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে’ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ টিংকুর কাছে পরাজিত হন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেও তিনি গত ১ বছর স্বাভাবিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বিএনপির কতিপয় ব্যক্তি কায়বা ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেনের অপসারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এরপর তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কায়বা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওলিয়ার রহমানের ভাতিজা সোহেলসহ ১৫/ ২০ জন।

কায়বা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, আলতাব চেয়ারম্যানের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের আসতে বাধা দিয়েছে। তার কক্ষে কেউ তালা ঝুলিয়ে দেয়নি। তিনি নিজেই ইউনিয়ন পরিষদে আসছে না।

সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানে না। যারা তালা ঝুলিয়েছে তারা তাকে কিছু জানায়নি। তিনি আরো বলেন কতিপয় ব্যক্তির কারণে দলের সুনাম নষ্ট হবে এমন কাজ তিনি সমর্থন করেন না।

কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার আগেই আমি জানতে পারি আমার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে, আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে বসতে দেয়া হবে না। আমি ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সর্বস্তরের জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। মূলত আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা এ কাজটি করছে।

শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছিল। ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলানো আছে, পরিষদে চেয়ারম্যান ছিলো না। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডাঃ কাজী নাজিব হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে, যদি আইনশৃঙ্খলার অবনতির মতো ঘটনা ঘটে’ তাহলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।



মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *