কলারোয়ায় রহমান মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড: ১২ দোকানির স্বপ্ন পুড়ে ছাই

কলারোয়া বাজারের একটি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। আগুনে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে কলারোয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রহমান মার্কেটে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে কলারোয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় অন্তত ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৭টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া পাঁচ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীরা ঘটনার আকস্মিকতায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে তাঁদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কলারোয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত হোসেন বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ও ফায়ার সার্ভিসের বিরামহীন উদ্যোগে আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে ঘন্টাখানের পরপরই। খবর পেয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা নিরুপায় হয়ে পুড়ে যাওয়া দ্রব্যসামগ্রী সরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁদের চোখেমুখে হতাশা ও হাহাকার ফুটে উঠেছে। অনেকের আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাঁরা এক প্রকার নিঃস্ব হয়ে পড়লেন। রহমান মার্কেটের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা আখলাছুর রহমান শেলী ও মো.আসফাকুর রহমান সোহেল জানান, তাঁদের মার্কেটের ১২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সব মিলিয়ে আনুমানিক ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে তারা মনে করেন। ফায়ার সার্ভিসের টিমের ধারণামতে, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে । রহমান মার্কেটে সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া ডেন্টাল ক্লিনিকের সাকিব জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে পুড়ে যেতে পারে এমন কিছু আর অবশিষ্ট নেই। তাঁর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো। অপর পাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাই ভাই পোল্ট্রির ডিম পুড়ে গেছে ৮ লাখ টাকার মতো। এছাড়া ইব্রাহিম মোবাইল সেন্টারে ৫ লাখ, জিসান টেলিকমে ১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দোকান মালিকেরা জানান। এই মার্কেটর একটি দোকানে পাখি ও খরগোশ বিক্রি করতেন মামুন নামের এক ব্যবসায়ী। আগুনের লেলিহান শিখায় এই নিরীহ পশুপাখিগুলোর মধ্যে ৫০টির মতো মারা গেছে। এরমধ্যে রয়েছে দুটি খরগোশ, টিয়া, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এদিকে ভাই ভাই পোল্ট্রির দোকানে একটি দামি ব্র্যান্ডের মোটর বাইক থাকায় সেটি পুড়ে আগুনের লেলিয়ান শিখা চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনের সূত্রপাত এই ভাই ভাই পোলট্রির দোকান থেকে হয়েছে- এমনটি বলতে শোনা গেছে কারো কারো মুখে। বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে রহমান মার্কেটে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র জানা সম্ভব হয়নি।
