ত্রিমোহিনীতে কপোতাক্ষ নদের উপর পাকা ব্রীজের দাবি দীর্ঘদিনের

সাতক্ষীরার কলারোয়া ও যশোরের কেশবপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। আর এই নদীর উপর ত্রিমোহিনীতে রয়েছে একটি কাঠের সাঁকো। দুই জেলার এপার ওপার যাওয়া আসা করতে হয় এই সাঁকো দিয়ে।এই নদের এক পাড়ে কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া কাশিয়াডাঙ্গা অপর পাড়ে কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজার অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা বেচার জন্য এই বাজারে যাতায়াত করে। আর তাদের পারাপারের একমাত্র উপায় নড়বড়ে এই কাঠের সাঁকো। কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া কাশিয়াডাঙ্গা ও কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজার। দুই পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রানের দাবি পাকা ব্রীজ। কিন্ত আজ অবধি কাঠের সাঁকোর পরিবর্তে পাকা ব্রীজ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।যাতে করে কোন আশার আলো দেখছেন না এলাকাবাসী। সরকার আসে যায় কিন্তু এলাকার মান উন্নয়ন হয়নি। বিগত সরকারের এমপি মুন্ত্রীরা কয়েক দফায় সাকোটি পরিদর্শন করে পাকা ব্রীজের আশ্বাস দিলেও তার কোন বাস্তবায়ন হয়নি।
যশোর – সাতক্ষীরা মহাসড়কের কাজিরহাট থেকে শাকদাহ বাজার হয়ে খোরদো বাজার তার পর কপোতাক্ষ নদী। এখানে রয়েছে একটি কাঠের সাঁকো। আর এই সাঁকোটি পার হলেই কেশবপুরের ত্রিমোহিনী বাজার। এখান থেকে রাজগঞ্জ হয়ে যাওয়া যায় যশোর জেলা সদর ও মনিরামপুর উপজেলা সদরে। এবং কেশবপুর উপজেলা সদর হয়ে চুকনগর দিয়ে অল্প সময়ে যাওয়া যায় বিভাগীয় শহর খুলনায় । এছাড়া যাওয়া যায় মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জম্মভূমি সাগরদাড়ি গ্রামে। কিন্তু এলাকার জনসাধারণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ব্রীজটির কারণে স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল শহরে নিয়ে যেতে পারে না। ফলে তারা পন্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে সাকোটি থাকে ঝুঁকির মধ্যে । প্রবল স্রোতে ভেসে যায় কাঠের তৈরি এই সাঁকোর অংশবিশেষ। তখন এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে পড়ে। আর এই সময় হঠাৎ দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে ১০/১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়।এ ছাড়া এই সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন ছেলে মেয়েরা স্কুল -কলেজে যাতায়াত করে। ছেলে মেয়েদের অভিভাবকরা সব সময় একটা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন। কখন না জানি কি ঘটে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,খুলনা থেকে আসা সাঁকো পার হওয়ার সময় সাকিবুল হাসান জানান, সাতক্ষীরা হয়ে আসতে যে সময় লাগে, তার চেয়ে অনেক কম সময়ে এ পথ দিয়ে আসা যাওয়া করা যায়। আমরা প্রায় খুলনা থেকে চুকনগর -কেশবপুর হয়ে কপোতাক্ষ নদীর ত্রিমোহিনী এই কাঠের সাঁকো পার হয়ে যাওয়া আসা করি। এ পথটি নিরিবিলি ও ঝুঁকি কম । তাই এই স্থানে কাঠের সাঁকোর পরিবর্তে পাকা ব্রীজ নির্মাণ হলে জনসাধারণের ভোগান্তির লাঘব হতো।
কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জানান, কপোতাক্ষ নদের উপর ত্রিমোহিনীতে পাকা ব্রীজের খুব দরকার।কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের হাফেজ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আমি বাড়ি থেকে প্রায় এই সাঁকো দিয়ে পার হয়ে কর্মস্থলে যায়। বর্ষা মৌসুমে আমাদের এলাকার জনসাধারণের ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। তাই কপোতাক্ষ নদীর দুই পাড়ের মানুষ পাকা ব্রীজের দাবি বাস্তবায়ন করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
