কলারোয়ার সীমান্তবর্তী ইউনিয়নে মাদকে ছড়াছড়ি অবাদে চলছে সেবন ও বিক্রি

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে চন্দনপুর কাকডাঙ্গা সোনাবাড়িয়াসহ সিমান্তবর্তী ইউনিয়নে মাদক সমস্যাটি এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতাদের কার্যক্রমে সামাজিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থী, যুব সমাজ ও পরিবারগুলোতে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে হিজলদি, সুলতানপুর, চান্দুরিয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচার হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এই এলাকাগুলো মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদাসম্পন্ন।
এছাড়া, চন্দনপুর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর এবং গয়ড়া বাজার, বিশেষ করে খলিলের বটতলা এলাকায় মাদক বিক্রয় ও সেবনের ঘটনা বেশি।
এমনকি যেখানে-সেখানে হাত বাড়ালে গাঁজা, ফেনসিডিল, মদ ও ইয়াবা পাওয়া যায়। গয়ড়া বাজারের বিভিন্ন সেলুন, রাস্তার ধারে থাকা গোপন দোকানগুলোতে এসব মাদকদ্রব্য মজুদ রাখা হয় এবং বিক্রি হয়। এই অবস্থা এলাকার সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করছে।
মাদক নিয়ে জনমনে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেক বাসিন্দারা জানান, রাতে অপরিচিত ব্যক্তিদের আনাগোনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট গোষ্ঠী প্রকাশ্যে মাদক সেবন করছে। তাদের মতে, “আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারি না। অনেক সময় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও সঠিক ব্যবস্থা পাই না।”
স্থানীয় সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকলেও মূল হোতারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হলে এসব হোতাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে এই অবৈধ কার্যক্রমটি পরিচালিত হচ্ছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা যায়। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই চাঁদা সংগ্রহের কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ জনগণের মাঝে দুঃশাসনের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। মাদক ব্যবহার ও সেবনের
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অমনোযোগিতা ও স্কুল ফাঁকি, চুরি এবং পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয় স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং মানসিক রোগ বৃদ্ধি।
সতর্কতা:
হিজলদি, সুলতানপুর ও চান্দুরিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও জনসাধারণকে আরও কঠোর নজরদারি ও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। মাদক ব্যবসা ও সেবন থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে দ্রুত প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিরোধে করণীয়:
1. স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযান
2. যুব সমাজকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা
3. মসজিদ, স্কুল ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সচেতনতা
4. গোপন তথ্য সংগ্রহ ও হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
5. মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রম সম্প্রসারণ
সিমান্তবর্তী ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করতে হলে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় যুব সমাজ এবং পরিবারগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এখনই সময় সোচ্চার হওয়ার। সমাজ থেকে মাদকমুক্ত না করতে পারলে আগামি প্রজন্ম বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করেন সুশিল, শিক্ষিত ও সচেতন মহল।
