ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিতের চেষ্টা, সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ
তালায় সাংবাদিক রেন্টু লাঞ্চিত: চাঁদাবাজ গণধোলাইয়ের শিকার
তালা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান রেন্টুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় কথিত এক চাঁদাবাজ গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। এ ঘটনাকে ঘিরে একটি কুচক্রী মহল ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে রাজু মোড়ল ও তার চাচাতো ভাই আব্দুস সাত্তার মোড়ল গংদের মধ্যে পারিবারিক রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার বিকেলে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী রেহেনা আক্তার (৩৫) ও তার এক বছর বয়সী শিশু সন্তানসহ তিনজন আহত হন। আহতরা তালা হাসপাতালে ভর্তি হন।
এসময় রাজুর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা আহতদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় সাংবাদিক ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, রাজুর সহযোগী নাজমুল নামে এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত থেকে মহিলাদের উদ্দেশে অশালীন ভাষায় গালাগাল ও হামলার চেষ্টা করে। উপস্থিত এ্যাড. মশিয়ার রহমান পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে নাজমুল তার ও সাংবাদিক রেন্টুর উপর চড়াও হয় এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা নাজমুলকে গণধোলাই দেয়। স্থানীয়রা জানান, ওই নাজমুল কলারোয়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের আবুল হোসেন মন্টুর ছেলে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারি ও একাধিকবার গণপিটুনির অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তালার সিনিয়র সাংবাদিক এম এ ফয়সাল, আকবর হোসেন, মীর মিল্টন, মোতাহিরুল শাহীন, সরদার আব্দুল্লাহ, মিলন, জয়দেব চক্রবর্তীসহ আরও অনেকে। তারা জানান, ছোটখাটো পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে একটি মহল ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রূপ দিতে চাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ্যাড. মশিয়ার রহমান বলেন, “এটি ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক একটি ছোট ঘটনা। বাড়িতে বসে সমাধান করা উচিত ছিল। কিন্তু কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক রঙ দিয়ে সাংবাদিক সমাজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে — যা অনভিপ্রেত।”
এদিকে, কথিত সাংবাদিক নাজমুলকে গণধোলাই দেওয়ার পর স্থানীয় জনতা উল্লাস প্রকাশ করে ও মিষ্টি বিতরণ করে বলে জানা গেছে।
তালা প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ হাকিম বলেন,
“জমি সংক্রান্ত বিরোধে পূর্বে শালিশ হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে সাংবাদিক রেন্টুকে লাঞ্ছিত করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। নাজমুল নামের ওই ব্যক্তি আমাদের প্রেসক্লাবের সদস্য নন; বরং তিনি সাংবাদিক পরিচয়ে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন বলে শুনেছি।”
তালা উপজেলা প্রতিনিধি (কালের কণ্ঠ) রোকনুজ্জামান টিপু বলেন, “একজন চিহ্নিত নারী কেলেঙ্কারির হোতা, চাঁদাবাজ ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রকৃত সাংবাদিকদের সম্মান ক্ষুণ্ণ করছে।”
ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার মোড়ল ও তার বৃদ্ধ পিতা মোহাম্মদ আলী মোড়ল (৮০) বলেন, “কথিত সাংবাদিকের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।”


