নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই, সময়মতোই ভোট হবে: ইসি সানাউল্লাহ

লনির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। নির্ধারিত সময়েই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার(১৪ ডিসেম্বর)সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনকে বানচাল, প্রতিহত বা ক্ষতিগ্রস্ত করার যেকোনো চেষ্টা ব্যর্থ হবে—এমন একটি স্পষ্ট বার্তা সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে একযোগে এসেছে। যেখানে যতটুকু দৃঢ়তা প্রয়োজন, বাহিনীগুলো সেখানে ততটুকুই কঠোর অবস্থানে থাকবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই, সময় মতোই নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে ঘিরে যেসব বাধা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকার অবহিত রয়েছে।

সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার অংশ নেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে যেসব চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর প্রকৃতি নিরূপণ করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এসব প্রতিহত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বন্ধুর বেশে অনুপ্রবেশকারী নাশকতাকারীরা থাকতে পারে—এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও মাঠপর্যায়ে সক্রিয় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক দোষারোপের সুযোগে সন্ত্রাসীরা যাতে সুবিধা নিতে না পারে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর তথ্য সন্ত্রাসীদের উস্কানি বা পলায়নে সহায়তা করছে কি না—সেসব বিষয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখছে।

সম্প্রতি শরীফ ওসমান হাদির ওপর চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনাকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, এ ঘটনাটি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত না জানালেও কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় সামনে এসেছে, যেগুলোর সঙ্গে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত। তিনি জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তির অতীত ও তার অপরাধমূলক রেকর্ড নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া অনেক সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হয়ে বাইরে অবস্থান করছে—এ বিষয়েও করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি চোরাগোপ্তা হামলাগুলো বড় কোনো পরিকল্পনার অংশ কি না, নাকি বিচ্ছিন্ন ঘটনা—তা মূল্যায়ন করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের চেষ্টার ঘটনাও আলোচনায় এসেছে।

অধিক সংখ্যায় চেকপোস্ট স্থাপন, সন্ত্রাসীদের চলাচল সীমিত করা, অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে অভিযান জোরদারের কথা তুলে ধরে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, এ পর্যন্ত নেওয়া সরকারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্যোগে কমিশন সন্তুষ্ট। তবে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘ডেবিল হান্ট’ অপারেশনের দ্বিতীয় ধাপ সমন্বিতভাবে পুনরায় শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সব বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয় জোরদার করা হবে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সাম্প্রতিক প্রবণতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের যেকোনো নাগরিকের নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে কমিশন ও নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা সংবেদনশীলতার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।



মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *