আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

শ্যামনগরে সাঈদ ও কালিগঞ্জে সুমন জয়ী

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে এবং শেষ হাসি হাসলো সাঈদ-উজ-জামান সাঈদ এবং শেখ মেহেদী হাসান সুমন। শঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থাকলেও সাতক্ষীরার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল অবস্থান ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারণে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতিত শেষ হলো উৎসবের নির্বাচন। এবারের উপজেলা নির্বাচন হয়েছে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে-শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রভাষক সাঈদ-উজ-জামান সাঈদ (আনারস) ৫১হাজার ৩৫১ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। অপরদিকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদ্য সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য গাজী গোলাম মোস্তফা (ঘোড়া) পেয়েছেন ৩২ হাজার ৩৭৪ ভোট।

কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৭৯টি কেন্দ্রে ও শ্যামনগরে ১১টি ইউনিয়নে ৯২টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন ভাবে ভোট গ্রহণ চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। কালিগঞ্জ উপজেলায় ৬২হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী হাসান সুমন (আনারস)। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী (ঘোড়া) পেয়েছেন ৩১ হাজার ৯৪৫ ভোট।
বুধবার (৮ মে) রাতে গণনা শেষে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় এ তথ্য জানায়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও ভোটার উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক।

এদিকে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনভর উপজেলা জুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল ৮টায় উপজেলার ৭৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটদের উপস্থিতি ছিল কম। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বেলা ৩টার দিকে উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বিটিজিআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাময়িক সময়ের জন্য মহিলা ভোটারের লম্বা লাইন দেখা গেলেও সারাদিনে অন্যান্য কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন চোখে পড়েনি। ভোটকেন্দ্রসমূহের ভিতরে ও বাইরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছিল না কোনো দ্বন্দ্ব কিংবা উত্তেজনা।
প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জ উপজলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দুই প্রার্থী মুখোমুখি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। এরমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ মেহেদী হাসান সুমন আনারস প্রতীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক শেখ ইকবাল আলম বাবলু বই প্রতীকে ৬১হাজার ১৭৩ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শেখ নাজিমুল ইসলাম তালা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩৬৫ভোট। এছাড়া মুকুল বিশ্বাস (টিয়া পাখি) ৪ হাজার ৬৫৬ ভোট, কাজী মোফাখখারুল ইসলাম (চশমা) ১হাজার ৬৫৩ ভোট এবং কাজী আব্দুস সালাম (উড়োজাহাজ) পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৪ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ফারজানা শওকাত আফি (হাঁস প্রতীক)। তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৭৪ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দিপালী রানী ঘোষ (ফুটবল) পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৫১ ভোট। সুরাইয়া আফরোজ সুমি (কলস প্রতীক) ১৬ হাজার ৩২৯ ভোট এবং শ্যামলী অধিকারী (পদ্মফুল প্রতীক) পেয়েছেন ১০ হাজার ৩১১ ভোট। উপজেলার ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৪১৬, মহিলা ভোটার ১ লাখ ২২ হাজার ৩৯৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন। এ নির্বাচনে শতকরা ৩৯ দশমিক ৩৬ ভাগ ভোট পড়েছে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।



মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *