কলারোয়ায় আগাতা ফিডের চাষী সম্মেলনে দেওয়া
বিরিয়ানী খেয়ে অসুস্থ অর্ধশত,ভর্তি নিচ্ছে না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিরিয়ানী খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অর্ধশত মানুষ। শনিবার বেলা ১টার দিকে আগাতা ফিড লিমিটেডের অনুষ্ঠানের পরে বাড়িতে ফিরে তাদের দেওয়া বিরিয়ানি খেয়ে এঘটনা ঘটে।অসুস্থদের অধিকাংশদের কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অনেকেই আশেপাশের ক্লিনিকের ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই নিজের চেষ্টায় জেলা সদরে ভর্তির জন্য চলে গেছে বলে জানা যায়।কলরোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জায়গার অভাবে ভর্তি নিতে পারছে না রোগীদের।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী আহসান নগরের রবিউল ইসলাম (৪০) জানান, কলারোয়ার জালালাবাদ ইউনিয়নের সিংহলাল বাজারে আগাতা ফিডের চাষী সম্মেলনে বিরিয়ানি খেতে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে খাওয়ার পর অধিকাংশ মানুষের বমি, পেটে ব্যথা, পাতলা পায়খানা শুরু হয়। যারা বিরিয়ানি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল এবং পরিবারে যারা খেয়েছে সকলেই প্রায় এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আফতাবুজ্জামান জানান, তারা কলারোয়া উপজেলার চৌরাস্তা মোড় ঢাকা নবাব বিরিয়ানি হাউস থেকে ১২০ প্যাকেট খাবার অর্ডার করেন। অনুষ্ঠানের শেষে সকলের মধ্যে বিতরণ করি সন্ধ্যার পর পরই আমার কাছে একের পর এক ফোন আসতে থাকে অধিকাংশ মানুষের বমি, পেটে ব্যথা এবং পাতলা পায়খানা হচ্ছে। কেউ কেউ গ্রাম ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে। আর যারা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন তারা কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেকেই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: ফয়সাল জানান পেটে ব্যথা বমি ও পাতলা পায়খানা নিয়ে বৃদ্ধ শিশু নারী-পুরুষ মিলিয়ে এই পর্যন্ত আনুমানিক ৪০ জনের মত ভর্তি হয়েছে। একসাথে এক রোগী আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা ধারণা করছি প্রাথমিকভাবে ফুড পয়জনিং হয়েছে।
এদিকে অসুস্থ হয়ে শংকরপুর গ্রামের আলফার রহমানের মেয়ে লামিয়া (১৪) এর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলমান রয়েছে। তার ছোট বোন তামিমাও (১২) পেট ব্যথায় ছটফট করছে। নানার নিয়ে যাওয়া খাদ্য খেয়ে তানভীর (৮) এর অবস্থা আশঙ্কা জনক হলেও সে এখন অনেকটা সুস্থের পথে।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ৮০ জন রোগী ভর্তি আছে। বাকি রোগীদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এখানে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছে তারা সবাই ওই সেমিনার থেকে পাওয়া বিরিয়ানি খেয়েছে বলে জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, রোগীর চাপে হাসপাতালের স্টকে থাকা স্যালাইন শেষ হয়ে গেছে। আশপাশের দোকানগুলোতেও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নওয়াব বিরিয়ানির মালিক রবিউল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।