বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীরের জামিন মঞ্জুর
গ্রেফতারের পর জামিন পেয়েছেন দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) তাকে জামিন দেয় ঢাকার একটি আদালত।
জামিন পাওয়ার পর মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীর জানান ‘এটিকে গ্রেফতার বলা ঠিক নয়। আমাকে পরিপূর্ণভাবে হয়রানি করা হয়েছে। ব্যবাসায়ীদের টার্গেট করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের নিজের রেষারেষি নিয়ে যদি এমনটি ঘটে, সেটি ব্যবসার জন্যই ভালো নয়। ব্যবসায় একজন আরেকজনের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করবে, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবে, তবে সেটি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা ঠিক নয়। এমনটি চললে পুরো শিল্পটিই নোংরা হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরে দিনমজুর আক্তার হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় আলমাস কবীরকে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্যবাসায়ীরা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বেসিস। হয়রানিমূলক মামলায় আলমাস কবীরের নামে মামলা ও তাকে গ্রেফতারে প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভারও আয়োজন করেছে বেসিস। আগামীকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীতে ওই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বেসিসের বর্তমান সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে হয়রানিমূলক মামলায় বেসিস-এর সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরকে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বেসিস-এর একাধারে দুই মেয়াদের একজন প্রাক্তন সভাপতি, এফবিসিসিআই-এর প্রাক্তন পরিচালক এবং মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরের বিরুদ্ধে এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ঘটনায় বেসিস বিস্মিত, মর্মাহত এবং উদ্বিগ্ন।
বেসিসের বর্তমান সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে হয়রানিমূলক মামলায় বেসিস-এর সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরকে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বেসিস-এর একাধারে দুই মেয়াদের একজন প্রাক্তন সভাপতি, এফবিসিসিআই-এর প্রাক্তন পরিচালক এবং মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরের বিরুদ্ধে এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ঘটনায় বেসিস বিস্মিত, মর্মাহত এবং উদ্বিগ্ন।
এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত মামলায় সর্বমোট ৮২ জন অভিযুক্তদের মধ্যে সৈয়দ আলমাস কবীর একজন এবং তার পরিচয় হিসেবে সাবেক সভাপতি, বেসিস উল্লেখ করা হয়েছে। ’বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে হেনস্থা করা, বেসিস ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা এবং গ্রেফতারের ঘটনায় বেসিস তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ বিষয়ে বেসিস-এর সম্মানিত সদস্যদের উপস্থিতিতে, বেসিস-এর অবস্থান স্পষ্ট করতে আগামীকাল বেসিস একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে।’
এদিকে, ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইদুল ইসলাম ফরওয়ার্ডিং রিপোর্ট দেওয়ার পর ঢাকা মহানগর হাকিম মো. বেলাল হোসেন আলমাস কবীরকে জামিনের আদেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তিনি। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী ঘটনার সময় তার মক্কেল বিদেশে ছিলেন উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন দিনমজুর মোহাম্মদ আক্তার হোসেন (২৬)। এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা ওবায়দুল হক বাদী হয়ে আলমাস কবীরসহ ৮০ জনকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
তথ্যমতে, ২০০৬ সাল থেকে আলমাস কবীর মেট্রোনেটের সিইও ছিলেন। কোম্পানিটি সম্প্রসারণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই কোম্পানিটি ইন্ট্রানেট, ইন্টারনেট, আইপি টেলিফোনি, ক্লাউড কম্পিউটিং, ফিনটেকসহ নানা ধরনের আইটি-সংশ্লিষ্ট পরিসেবা দিয়ে আসছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ ও পরিচালকদের মধ্যে দ্বন্ধের তথ্যও গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে দখল, টাকা আত্মসাৎসহ হামলার অভিযোগ তুলে। সংবাদ সম্মেলন করেও এসব অভিযোগ তোলা হয়।