মেহেরপুরে জেলা জামায়েতের সাবেক আমির ছমির উদ্দিনের ইন্তেকাল

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না এলাহী রাজিউন)।

আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল পৌণে ১১ টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের ছেলে ডাক্তার তারিক মোহাম্মদ তাওয়াবুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ২৫ অক্টোবর তিনি আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন। গতকাল ২৮ অক্টোবর দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত “ঐতিহাসিক পল্টন ট্রাজেডি দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর মায়ের কবর জিয়ারত শেষে বাড়িতে এসে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে মেহেরপুর ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুকালে তার ৪ ছেলে ৪ মেয়ে, স্ত্রী আত্মীয় স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী বন্ধু বান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রয়েছে।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকুরী করতেন। চাকুরী শেষে তিনি দীর্ঘদিন কুয়েত ছিলেন।

পরে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর নির্বাচিত হন।

পরে তিনি দীর্ঘদিন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের সূরা সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ২০০৬ সালের পর মেহেরপুর সামসুজ্জোহা পার্কে প্রকাশ্যে পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন স্বীকার হন।

তাঁর বড় ছেলে মেহেরপুর জেলা জামায়াতের তৎকালিন সেক্রেটারী ও জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় ইসলামি ব্যাংকের কাছ থেকে পুলিশ আটক করেন।

ওইদিন গত রাতে বন্দর গ্রামের শ্বসানঘাট এলাকায় কথিত ক্রস ফায়ারের নামে হত্যা করে। তারপরপরই আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন তার আমেরিকা প্রবাসী মেঝো ছেলের কাছে চলে যান।

তারপর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন আওয়ামীলীগ সরকার। এছাড়া শহরের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর বাড়িটি।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের মায়ের মৃত্যুর সময় দেশে আসলে মায়ের জানাযা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বেশ কিছুদিন হাজত বাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও আমেরিকাতে চলে যান তিনি।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের আকষ্মিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজ উদ্দীন খান, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, আলমগীর খান ছাতুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠণের নেতৃবৃন্দ।



মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *